training image

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কৃষির গুরুত্ব

বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশের অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও জীবনের সঙ্গে কৃষি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী কৃষির উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করে। তাই কৃষির গুরুত্ব শুধু খাদ্য উৎপাদনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি জাতির সার্বিক উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের একটি বড় অংশ কৃষি খাত থেকে আসে। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ছিল ১১.৩৮% (স্থির মূল্যে)। এর মধ্যে শুধুমাত্র শস্য খাতের অবদান ছিল ৫.৫১%। ধান, গম, পাট, সবজি, ও ফলমূল ইত্যাদি কৃষিপণ্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে, এবং কিছু পণ্য বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করে। পাট, তুলা, চা, তামাকসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য দেশের শিল্প খাতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে তুলা উৎপাদনে কোন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না থাকায় গার্মেন্টস শিল্পের জন্য সুতা আমদানীতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা চলে যায়। তুলা উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন আমাদের দেশের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের জন্য অত্যাবশ্যক। বাংলাদেশের জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে, ফলে খাদ্যের চাহিদাও বাড়ছে। একাধারে কৃষি জমিও দিন দিন কমে যাচ্ছে। কৃষির সার্বিক উন্নয়ন ব্যাতিত জনবহুল বাংলাদেশে খাদ্য চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। ফসল উৎপাদনের আধুনিক প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক চাষাবাদ দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের প্রায় ৮০% মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশের মোট শ্রমশক্তির প্রায় ৪৫.৪% এখনো কৃষি খাতে নিয়োজিত। এটি গ্রামীণ জীবিকার মূল ভিত্তি। দেশের একটি বড় জনগোষ্ঠী কৃষিজীবী। কৃষিকাজ ছাড়াও কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিপণন এবং বিতরণ কার্যক্রমের মাধ্যমে বহু মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে। নারীদের অংশগ্রহণও এই খাতে দিন দিন বাড়ছে। কৃষিভিত্তিক উন্নয়ন গ্রামীণ জনগণের আয় বৃদ্ধি করে। এতে করে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি দারিদ্র্য হ্রাস পায় এবং জীবনমান উন্নত হয়।